আমাদের শরীরে ভিতরে কয়েক কোটি ব্যাকটেরিয়া আছে | তবে ভয়ের কোন কারণ নেই, এটাই স্বাভাবিক |
তার মধ্যে কিছু আছে ভালো ব্যাক্টেরিয়া আর কিছু খারাপ ব্যাক্টেরিয়া | আমাদের বেঁচে থাকার জন্য বা স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য এই দুই ব্যাক্টেরিয়া দরকার তবে ভালো ব্যাক্টেরিয়ার বেশি প্রয়োজন |
তেমনি আমাদের সবার ভিতরে পজেটিভ এনার্জি ও নেগেটিভ এনার্জি আছে | আমাদের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে এবং ভালো, মন্দ বুঝতে আমাদের দুইটা এনার্জিই দরকার | একটা উদাহরণ দিয়ে বলি :
ধরেন আপনাকে কেউ এক চামুচ লবন ও চিনি খেতে দিলো | আপনি যদি সেটা পূর্বে না খেয়ে থাকেন, তাহলে ভাবেন দুটোই দেখতে অলমোস্ট একই রকম এবং একই কাজে লাগে | লবন ও চিনি আমাদের জন্য দুইটাই দরকার কিন্তু পরিমান মতো |
আবার ধরেন আপনাকে কেউ একটা চমচম, একটা কালোজাম, একটা কাঁচাগোল্লা, একটা সন্দেশ আর একটা রসগোল্লা খেতে দিলো | আপনি যদি এগুলো কখনো না খেয়ে থাকেন তাহলে হয়তো জানতেন এইগুলো সব মিষ্টি একই রকম | কিন্তু খেলে বুঝতে পারবেন কোনটা কম মিষ্টি কোনটা বেশি | কোনোটা আপনার একটু বেশি ভালো লাগবে কোনটা একটু কম ভালো লাগবে |
তেমনি আমাদের ভিতর এই পজেটিভ ও নেগেটিভ এনার্জি গুলো আমাদের বিভিন্ন কাজে প্রভাবিত করে এবং আমাদের ভালো-খারাপ বিষয় গুলো চিনতে শিখায় | তবে আমাদের নেগেটিভ এনার্জি এর চেয়ে পজিটিভ এনার্জি বেশি দরকার |
এখন প্রশ্ন থাকতে পারে, তাহলে কিভাবে বেশি বেশি পজেটিভ এনার্জি অর্জন করা যায় ?
পজিটিভ এনার্জি বাড়াতে আপনি বই পড়তে পারেন | ভালো বা মোটিভেশনাল কোনো মুভি দেখতে পারেন বা কোনো মোটিভেশনাল পার্সোনালিটির Youtube বা ফেইসবুক ভিডিও দেখতে পারেন বা অন্য কারো জীবন যুদ্ধের গল্প শুনতে পারেন | আপনি যখন কোনো গল্প পড়েন বা জানেন চেষ্টা করবেন ওই গল্পের চ্যালেঞ্জ গুলো কি ছিলো খুঁজে বের করতে | ওই গল্পে ওই চ্যালেঞ্জ গুলো কিভাবে সমাধান করেছে? এর চেয়ে কি অন্য ভালো উপায় ছিলো ? আপনি থাকলে কি করতেন? ওই গল্প থেকে শিক্ষণীয় বা টেকওয়ে কি ছিলো? চেষ্টা করেন বিষয়টি পজিটিভ ভাবে দেখতে বা বের করতে |
আবার আপনি যদি নেগেটিভ মাইন্ডসেট মানুষের সাথে বেশি মিশেন তাহলে নেগেটিভ কথা বেশি শুনতে পাবেন এবং সেই নেগেটিভ এনার্জি আপনাকে প্রভাবিত করবে | আর যদি পজেটিভ মাইন্ডসেট এর মানুষের সাথে মিশেন তাহলে পজেটিভ কথা বেশি শুনতে পাবেন | এতে আপনার ভিতরে পজেটিভ এনার্জি কাজ করবে এবং আপনি আপনার ও অন্যদের ভালো কাজে আগ্রহ বাড়বে |
অনেক সময় দেখবেন আপনারই কোনো বন্ধু সব সময় অন্যের ভুল ধরে বেড়ায় | সে হয়তো ক্যারিয়ার তৈরী তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ না | তারা প্রায়ই হয়তো অন্যের সমালোচনা করে | হয়তোবা উনি পরিবার বা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার সুযোগ পাইনি বলে তার ভিতর ইনফ্যুরিটি কমপ্লেক্স কাজ করে এবং নেগেটিভ এনার্জি তাকে বেশি প্রভাবিত করে | উনি হয়তো উনার ইচ্ছে থাকতে টাকা বা সময় বা সুযোগের অভাবে নিজেকে তৈরী করতে পারেনি আর তাই অন্যের ভালোটা তারা ভালো ভাবে নিতে পারেনা |
আমাদের ভালো-খারাপ দুই রকম বন্ধু থাকতে পারে এবং তাদের মধ্যে ব্যালান্স করে আমাদের চলতে হয় | আমার যত বন্ধু-বান্দব থাকুক না কেন, আমার ক্যারিয়ার আমারই তৈরি করতে হবে | মাস শেষে যখন বেতন হাতে পাই তখন মনে হয় আরো কিছু ভালো বেতন পেলে পরিবারের জন্য আরো অনেক কিছু করতে পারতাম |
আমরা অনেক সময় চেষ্টা করি আমাদের জমানো টাকা দিয়ে একটা গাড়ী, বাড়ী/প্লট বা সম্পদ কিনতে | সেটাও সম্পদ আমি স্বীকার করছি কিন্তু শিক্ষা যে একটা বড় সম্পদ সেটা ভুলে যাই | আমরা আগামী ১২ মাস যদি আমাদের শিক্ষা বা ক্যারিয়ার আপগ্রেড উপর কিছু ইনভেস্ট করি তাহলে পরের ১২ মাস আমরা তার চেয়ে কয়েক গুন বেশি উপার্জন করতে পারবো |
নিজেকে নিজেই জিজ্ঞাসা করুন, গত কয়েক বছর নিজেকে আপগ্রেড করবেন বলে কোনো সময় নষ্ট করেছেন কিনা?
তাহলে বলেন, আপনি আপনার ক্যারিয়ার এর জন্য কি সিদ্ধান্ত নিলেন?
নাজমুল খান
সিঙ্গাপুর থেকে |